Header Ads

আত্তাহিয়্যাতু কি মিরাজ থেকে এসেছে?

 তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) এর ইতিহাস:-

আমরা যারা নামাজ পড়ি, সকলেই জানি নামাজের দ্বিতীয় ও চতুর্থ রাক’য়াতের শেষে-তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব। কিন্তু জানা আছে কি তাশাহহুদ এর ইতিহাস ? কি পড়ি আমরা তাশাহহুদ এর মধ্যে ? আসুননা, আমরা আজকে জানার চেষ্টা করি তাশাহহুদ এর অর্থ আর ইতিহাস।


بَاب التَّشَهُّدِ فِي الْآخِرَةِ

أَبُو نُعَيْمٍ قَالَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ شَقِيقِ بْنِ سَلَمَةَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ كُنَّا إِذَا صَلَّيْنَا خَلْفَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قُلْنَا السَّلاَمُ عَلَى جِبْرِيلَ وَمِيكَائِيلَ السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ وَفُلاَنٍ فَالْتَفَتَ إِلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ اللهَ هُوَ السَّلاَمُ فَإِذَا صَلَّى أَحَدُكُمْ فَلْيَقُلْ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ فَإِنَّكُمْ إِذَا قُلْتُمُوهَا أَصَابَتْ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ صَالِحٍ فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ أَشْهَدُ أَنْ لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ.

সহীহ বুখারী ৮৩১. শাকীক ইবনু সালামাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাযি.) বলেন, আমরা যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে সালাত আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম, ‘‘আস্সালামু আলা জিব্রীল ওয়া মিকাইল এবং আস্সালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান।’’ তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ আল্লাহ্ নিজেই তো সালাম, তাই যখন তোমরা কেউ সালাত আদায় করবে, তখন সে যেন বলে-

التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ

‘‘সকল মৌখিক, দৈহিক ও আর্থিক ‘ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী! আপনার উপর আল্লাহর সালাম, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। সালাম আমাদের এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের উপর বর্ষিত হোক।’’ কেননা, যখন তোমরা এ বলবে তখন আসমান ও যমীনের আল্লাহর সকল নেক বান্দার নিকট পৌঁছে যাবে। এর সঙ্গে اَشْهَدُ أَنْ لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ (আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মা‘বূদ নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল)-ও পড়বে। (৮৫৩, ১২০২, ৬২৩০, ৬২৬৫, ৬৩২৮, ৭৩৮১; মুসলিম ৪/১৬, হাঃ ৪০২, আহমাদ ৩৫৭৫)  (আধুনিক প্রকাশনীঃ৭৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৭৯৩)

তাশাহহুদ (আত্তাহিয়্যাতু) সূচনা:

শুরুর কথা............ .হযরত খাদিজা (রাঃ) ইন্তেকাল করেছেন। মক্কার মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় লাভ করলেও অধিকাংশই মুশরিক রয়ে গেছে। তাই রাসুল (সাঃ) এর মনে অনেক ব্যাথা। দিনে দিনে রাসুলের (সাঃ) প্রতি কোরাইশদের অত্যাচারের মাত্রাও বেড়ে গেছে। এমন অবস্থায় আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন রজব মাসের এক মহিমাম্বিত রজনীতে তার প্রিয় বন্ধুকে হযরত জিব্রাইল (আঃ) এর মাধ্যমে তার সান্ধিধ্যে ডেকে নিলেন, যা ইতিহাসে মে’রাজ নামে পরিচিত। রাসুল (সাঃ) বায়তুল্লাহ হয়ে বায়তুল মোকাদ্দাস, অতপর উর্দ্ধজগতের সফর শুরু করলেন। বোরাক নামক বেহেশতি বাহনে চড়ে প্রথম আসমান, দ্বিতীয় আসমান, তৃতীয় আসমান করে অতপর সিদরাতুল মুনতাহায় পৌছলেন। এ পর্যন্ত হযরত জিব্রাইল (আঃ) রাসুল (সাঃ) এর সাথী হলেন। সিদরাতুল মুনতাহাতে গিয়ে হযরত জিব্রাইল (আঃ) রাসুল (সাঃ) এর কাছ থেকে বিদায় নিলেন। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন তার বন্ধুর জন্য বোরাকের থেকেও গতি সম্পন্ন বাহন ‘রফরফ’ পাঠিয়ে দিলেন। এ বাহনে চড়ে রাসুল (সাঃ) আল্লাহর নূরের সত্তর হাজার পর্দা অতিক্রম করে মহান প্রভুর দরবারে গিয়ে পৌছলেন।

দুজন দুজনার খুব নিকটবর্তী হলেন। আল্লাহ হলেন মেজবান আর আমার নবী (সাঃ) হলেন মেহমান। সুন্নত তরীকা হলো, মেহমান কারো বাড়িতে গেলে মেজবানের জন্য কিছু তোহফা/উপহার নিয়ে যাওয়া। স্বয়ং আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাতে গেছেন তার প্রিয় রাসুল (সাঃ), তিনি কি নিয়ে যেতে পারেন ? আল্লাহতো দুনিয়াবী কোন কিছুর মুখাপেক্ষী নন। তাহলে ? আল্লাহর হাবীব জনাবে মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন আল্লাহর খুবই নিকটবর্তী হলেন, এমনকি তাদের মাঝে একটি রশি বা একটি ধনুকের সমান জায়গার ব্যাবধান ছিলো তখন- শ্রেষ্ঠ তোহফা হিসেবে পড়লেন. "আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াসসালাওয়াতু ওয়াত্তায়্যিবাত" “সকল মর্যাদাব্যঞ্জক ও সম্মানজনক সম্বোধন আল্লাহর জন্য। সমস্ত শান্তি, কল্যাণ ও প্রাচুর্যের মালিক একমাত্র আল্লাহ। সব প্রকার পবিত্রতার মালিকও তিনি।” এক কথায় রাসুল (সাঃ) আর্থিক, শারিরীক ও মৌখিক সব ধরনের ইবাদাত একমাত্র আল্লাহর জন্য তোহফা হিসেবে পেশ করলেন।

অতপর আল্লাহ তায়ালা রাসুল (সা.) কে তিনটি জিনিস দিলেন এভাবে- "আসসালামু আ’লাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়ারাহমাতুল্লহি ওয়াবারাকাতুহু" হে নবী! আপনার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক, আল্লাহর অনুগ্রহ ও বরকত বর্ষিত হোক। উম্মতের কান্ডারী নবী (সাঃ) এমন মিলন মুহুর্তেও তার উম্মতকে ভুলেন নাই। আল্লাহর অনুগ্রহ তার উম্মতের জন্যও চেয়ে নিলেন এভাবে- "আসসালামু আ’লাইনা ওআ’লা- ই’বাদিল্লাহিস সলিহীন" আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর সকল নেক বান্দাহদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ এবং তার রাসুল (সাঃ) এর এমন মধুর আলোচনা শুনে আরশবাহী- সকল ফেরেশাতাগণ সমস্বরে একত্রে বলে উঠলেন- "আশহাদু আন লা- ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াশহাদু আন্না মোহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়ারাসুলুহু" আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি মোহাম্মাদ (সাঃ) আল্লাহর বান্দাহ এবং রাসুল।

আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামিন, রাসুল (সাঃ) এবং ফেরেশতাদের এমন সম্মিলিত কথোপকথনই হয়ে গেলো তাশাহহুদ, যা মে’রাজের রজনীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোহফা হিসেবে পাওয়া পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ সহ প্রত্যেক নামাজের দুই রাকাত বা চার রাকা’তের বৈঠকে পড়া ওয়াজিব।

তাশাহুদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা:

তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) পাচ রকমের পাওয়া যায়। হাদিসের মাঝে (প্রত্যেকটির নামকরন করা হয়েছে সাহাবাদের নামে, যিনি তা বর্ণনা করেছেন)।

আমরা শিখব যেটা ইবনে মাসউদ রা বর্ণনা করেছেন-

حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سَيْفٌ، قَالَ سَمِعْتُ مُجَاهِدًا، يَقُولُ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ سَخْبَرَةَ أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ، يَقُولُ عَلَّمَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَفِّي بَيْنَ كَفَّيْهِ التَّشَهُّدَ، كَمَا يُعَلِّمُنِي السُّورَةَ مِنَ الْقُرْآنِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ‏.‏ وَهْوَ بَيْنَ ظَهْرَانَيْنَا، فَلَمَّا قُبِضَ قُلْنَا السَّلاَمُ‏.‏ يَعْنِي عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.

সহীহ বুখারী ৬২৬৫. ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত তাঁর উভয় হস্তের মধ্যে রেখে আমাকে এমনভাবে তাশাহহুদ শিখিয়েছেন, যেভাবে তিনি আমাকে কুরআনের সূরা শিখাতেনঃ

التَّحِيَّاتُ للهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلٰى عِبَادِ اللهِ الصَّالِحِينَ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُه وَرَسُوْلُه

এ সময় তিনি আমাদের মাঝেই অবস্থান করছিলেন। তারপর যখন তাঁর ওফাত হয়ে গেল, তখন থেকে আমরা السَّلاَمُ عَلَيْكَ এ স্থলে السَّلاَمُ عَلَى النَّبِيِّ পড়তে লাগলাম। [৮৩১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭১৮)

তিনি বর্ণনা করেন যে, নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) তাকে শিক্ষা দিয়েছেন তার হাত নবী (সঃ) হাতের মাঝে রেখে, ইবনে মাসউদ পরবতীতে বর্ণনা করেছেন তার ছাত্র আলকামাহকে ঠিক সেই ভাবে যেভাবে মুহাম্মদ (সঃ) তাকে শিক্ষা দিয়েছেন এবং আলকামাহ শিক্ষাদেন তার ছাত্র ইবরাহিম -আন-নাকাহ কে। ঠিক একই ভাবে ইবরাহিম থেকে হাম্মাদ ইবনে সালামাহ এবং তারপর আবু হানীফা সকলেই একইভাবে হাতের মাঝে হাত রেখে তাদের ছাত্রকে শিক্ষা দেন --এতেই বুঝা যায় তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) এর গুরুত্ব।

ইবনে আব্বাস ইবনে মাসউদ এবং বাকীরা বর্ননা করেন যে, নবী করিম (সঃ) তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) শিক্ষা দিতেন যেন তিনি কোরআনের সুরা শিক্ষা দিচ্ছেন এটাই প্রামান করে তাশাহ্’হুদ (আত্তাহিয়্যাতু) এবং এটা মুখস্ত করার গুরুত্ব কতটুকু ।

তাৎপর্য :

আমরা দু'আতে সর্বদা বহুবচন ব্যবহার করি - যা সাধারনত মুসলিম উম্মার একত্রতা/এক জাতি/ এক সত্বা হিসেব বোঝাতে জোর দেয়া হয়েছে।

উপকারিতা ১:

নামাজের মাধ্যমে আমরা একতা প্রদর্শন করি, অনুশীলন করি ও মনোযোগ দেই এক হবার জন্য- যখন সবাই নামাজে দাড়াই একে অপরের পাশে, তখন বিবেচনা বা চিন্তা করিনা পাশের জনের অর্থ, বিত্ত, প্রভাব, শিক্ষা, ধনি গরিব, সাদা কালো ইত্যাদি, সকলে এক কাতেরে এক সমান আল্লাহর কাছে।

উপকারিতা ২:

আমরা দু'আ করতে গিয়ে যাতে নিজেরা স্বার্থপর না হই আবার আমাদের কে বিচক্ষণতা ও সচেতনতার বাস্তবিক হতে হয়। আমরা আমাদের জন্য প্রথমে দু'আ করি, তার পর বাকি সকল ঈমানদার মানুষের জন্য দু'আ করি। চিন্তা করে দেখুন, যখন বিমানে/প্লেনে ইমারজেন্সি সম্পর্কে বলা হয় তখন বলে, অক্সিজেন মাস্ক নামার সাথে সাথে আগে নিজে পড়বেন তার পর আপনার পাশের জন কে পড়াবেন, কোরআনে কি তাই বলে না ?? যেমন নিজেকে বাচাও এবং তোমার পরিবারকে বাচাও।

উপকারিতা ৩:

আমরা কি সকল মানুষের জন্য দু'আ করি না কি কোন দলের মানুষের জন্য দোয়া করি? নির্দিষ্ট দলের জন্য দু'আ করি আর তা হল ইবাদিল্লাহিস সালিহীন-- আল্লাহর নেক বান্দাদের জন্য।

সকল মুসলিম ঈমানদার বান্দা নামাজে দু'আ করছেন সমসময় আর পৃথিবীর সবখানে বসে। আমি যদি আমাকে মুসলিম ঈমানদার বান্দা হিসেবে ধরি তবে আমিও নিজেকে দু'আতে যুক্ত করতে পারি সকল মুসলিম ঈমানদার বান্দাদের দু'আতে, সকল নামাজে, সকল সময়, পৃথিবীর সবখানে। পরবর্তী প্রজন্মের সময় ও পুর্ববর্তী প্রজন্মের সময়ও । সুবহানাল্লাহ ! কত বড় নেয়ামত, আল্লাহর বরকত এবং আল্লাহর শিক্ষা কত মহান।

আঙ্গুল তোলার ইশারা কোন জায়গায় করতে হবে

ইমাম নববী বলেন, তাশাহ্হুদে "ইল্লাল্লাহু" বলার সময় ইশারা করতে হবে। বায়হাকীর বর্ণনানুসারে লা-ইলা ইল্লাল্লাহু বলার সময় করতে হবে। আল্লামা তীবী ইবনে ওমর বর্ণিত একটি হাদীসের বরাত দিয়ে বলেন, ইল্লাল্লাহু বলার সময় ইশারা করতে হবে, যাতে কথায় ও কাজে তওহীদের সামঞ্জস্য হয়ে যায়। হানাফী মতে 'লা-ইলা-হা বলার সময় তুলতে হবে এবং ইল্লাল্লাহু বলার সময় রেখে দিতে হবে। তবে ইল্লাল্লাহু ওপরে ইশারা করাটা বেশী সঙ্গত মনে হয় (আফ্যালুস সলা-ত ২০৬-২০৭ পৃঃ)।

শাফেয়ীদের মতে 'ইল্লাল্লাহু' বলার সময় আঙ্গুল দিয়ে একবার মাত্র ইশারা করতে হবে। হানাফী মতে 'লা-ইলা-হা' বলার সময় তর্জনী আঙ্গুল তুলতে হবে এবং 'ইল্লাল্লাহু বলার সময় তা রেখে দিতে হবে। মালেকী মতে আত্তাহিয়্যাতুর শুরু থেকে সালাম ফেরা পর্যন্ত আঙ্গুলটিকে ডানে ও বামে নাড়াতে হবে। হাম্বলীদের মতে যখন আল্লাহর নাম উচ্চারণ হবে তখন আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করতে, কিন্তু তা নাড়াবে না (ফেক্হুস সুন্নাহ, ১ম খন্ড, ১৭০ পৃঃ)। ইবনে ওমর (রা.) বলেন, দ্বিতীয় রাকআতে একটু আরামের জন্যই কেবল তাশাহ্হুদ রাখা হয়েছে। তাই আয়েশা রা আ বলেন, নবী মুহাম্মদ (সঃ) দ্বিতীয় রাকআতের বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়্যাত পড়তেন [ইবনে আবী শায়বা, ১ম খন্ড, ২৯৬ পৃঃ]।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে তাশাহুদ পড়ার এবং মুখস্ত করে সঠিকভাবে নামাযকে আদায় করার তৌফিক দান করেন, আমীন।

No comments

Theme images by TommyIX. Powered by Blogger.